নিউজ ডেস্ক:
বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপগুলোর আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নতুন একটি ব্যক্তিগত যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। ‘এক্সচ্যাট’ নামের এই নতুন টুলটি যুক্ত হয়েছে মাস্কের মালিকানাধীন ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মের অংশ হিসেবে। এতে ব্যবহারকারীদের ফোন নম্বর ব্যবহার করতে হবে না—এটাই এক্সচ্যাটের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য।ইলন মাস্ক দীর্ঘদিন ধরে ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মকে একটি ‘অল-ইন-ওয়ান’ অ্যাপে রূপ দেওয়ার কথা বলে আসছেন। এক্সচ্যাটকে সেই পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।এই নতুন অ্যাপের মূল আকর্ষণ—সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা। মাস্ক জানিয়েছেন, এতে বিটকয়েনের মতো উন্নত এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, যদিও এর বিস্তারিত প্রযুক্তিগত তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়া এক্সচ্যাটে থাকবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যাওয়া বার্তার সুবিধা, কোনো প্ল্যাটফর্ম-নির্ভরতা ছাড়াই অডিও ও ভিডিও কল করার ব্যবস্থা এবং চার ডিজিটের পাসকোড দিয়ে প্রান্ত-থেকে-প্রান্ত (এন্ড-টু-এন্ড) এনক্রিপশন সুরক্ষা।
বর্তমানে এক্সচ্যাটের বেটা সংস্করণ সীমিত পরিসরে পেইড সাবস্ক্রাইবারদের জন্য চালু করা হয়েছে। ইলন মাস্ক এটিকে ‘একেবারে নতুন ধরনের অ্যাপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং জানিয়েছেন, এটি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও সিগন্যালের মতো প্রচলিত মেসেজিং অ্যাপগুলোর সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হবে।এক্সচ্যাটের আত্মপ্রকাশ এমন এক সময় ঘটল, যখন মেটার মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম ধাপে ধাপে তাদের প্ল্যাটফর্মে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা সম্প্রসারণ করছে। হোয়াটসঅ্যাপে এই সুবিধা ডিফল্টভাবে চালু থাকলেও, ফেসবুক মেসেঞ্জার ও ইনস্টাগ্রামে তা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এক্সচ্যাট কেবল একটি বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ নয়—বরং এটি ইলন মাস্কের বৃহৎ ডিজিটাল এক্সোসিস্টেম তৈরির অংশ। ভবিষ্যতে এই অ্যাপে যুক্ত হতে পারে ডিজিটাল পেমেন্ট, মিডিয়া শেয়ারিং এবং ডেটিংয়ের মতো নানা ধরনের সেবা—যেমনটি চীনের বহুমুখী অ্যাপ উইচ্যাটে দেখা যায়।ইলন মাস্কের হাত ধরে আরও একবার প্রযুক্তির জগতে নতুন এক ধাপ রাখল ‘এক্স’। এখন দেখার বিষয়—এই বিকল্প প্ল্যাটফর্ম কত দ্রুত ব্যবহারকারীদের আস্থা অর্জন করতে পারে।